Bangla book online : অন্যমনস্ক - onnomonoshko book PDF ডাউনলোড
bangla book online: অন্যমনস্ক: জুনায়েদ ইভান – Zunayed Evan
read bangla book online: অন্যমনস্ক বইয়ের ভূমিকা
বইটি লেখার সময় অনেক তুচ্ছ থেকে তুচ্ছতর বিষয় নিয়ে পরিশ্রম করেছি। তার একটা নমুনা দিই। কোনো একটি গল্পে সংলাপের মধ্যখানে একটা লাইন এ রকম ছিল ‘আপনার নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে নিজেকে।’ অতঃপর বাক্যটি দ্বিতীয়বার পড়তে গিয়ে কোথায় যেন একটা ধাক্কা খেলাম ৷ যেন একটি গাড়ি চলছে মসৃণ রাস্তা দিয়ে। হঠাৎ করে বিশাল এক গর্ত। গর্তটা এমন যে চোখ এড়িয়ে যায়, কিন্তু একবার পা ফেললে বিপদ । আমি বাক্যটির শব্দ গঠনে মন দিই। ব্যাকরণঘটিত ভুল আছে কিনা, এসব উচ্চবর্গীয় বিষয় পাশ কাটিয়ে আমি কেবল বাক্যটিকে পরখ করে দেখি। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুকে প্রায় ১০০ থেকে ৪০ লক্ষ গুণ বড় দেখা যায় । আমার পাগলামি সেই সব হিসাব ছাপিয়ে শেষমেশ সমস্যার শেকড়ে গিয়ে পৌঁছায় ৷ ‘আপনার নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে নিজেকে।’ এখানে ‘নিজেকে’ শব্দটি দুবার এসেছে। অতঃপর খাতা কলম নিয়ে কাটাছেঁড়া করা-সেটা কতখানি শিশুসুলভ আর কতখানি কবিসুলভ; সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে প্রসঙ্গ বদলে যাবে।
online bangla book reading: সূচিপত্রঃ কি কি রয়েছে এই অন্যমনস্ক বইটিতে ?
- নিয়ার ডেথ মোমেন্ট-কেস স্টাডি ৫
- নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি
- সাবজেক্ট < অবজেক্ট
- স্ক্রিপ্ট রাইটার : প্রথম পৰ্ব
- মনোরথের কিছু একটা
- একটি আবাসিক হোটেল
- ডেথ সার্টিফিকেট
অন্যমনস্ক বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেয়া হলঃ
নিয়ার ডেথ মোমেন্ট-কেস স্টাডি ৫ঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি ঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
সকালের নাশতা শেষ করে চা খেতে খেতে পত্রিকা পড়ছি। একটা নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি-চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের একজন মানুষ হারিয়ে গেছেন। সেদিন ছিল শুক্রবার। আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বাসা থেকে বের হয়েছেন বাজার করতে। তার পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। সবকটা বোতাম ছেঁড়া। লোকটি পেশায় ছিলেন একজন কবি। এবার বই মেলায় তার একটি বই আসার কথা । বইটির নাম ‘নিখোঁজ! ‘ ছবিবিহীন চেহারার নানান বর্ণনার সহিত খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিলও বটে । বিজ্ঞপ্তির নিচে একটা ঠিকানা দেয়া। আমি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হলাম । ঘরের ভেতরে জীর্ণ শীর্ণ অবস্থা। নোনা ধরা ফিরোজা দেয়ালে সিমেন্টের আস্তর গলে পড়ছে। বসার ঘরে একটা আয়না। সেটা ভাঙা। বললাম, ‘পত্রিকায় একটি নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেখে এসেছি।’ ‘জি বসুন । ‘কিন্তু কোথাও একটা ঝামেলা হচ্ছে যেটা আমি ধরতে পারছি না। লোকটি চেয়ার টেনে এনে বসলেন। ‘আমি এসেছি কৌতূহল থেকে। ‘কী কৌতূহল?’ ‘নিখোঁজ গল্প লিখতে গিয়ে একজন নিখোঁজ হয়ে গেছেন। কোথায় যেন একটা রহস্য আছে।’
সাবজেক্ট < অবজেক্ট ঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
একটা ভেজা কুকুর দাঁড়িয়ে আছে কদমগাছের নিচে। এখানে অবজেক্ট কোনটি? ভেজা কুকুর নাকি কদম ফুল? এ রকম একটা চিন্তার ব্যাঘাত ঘটে আকস্মিক লোডশেডিংয়ে। আলোর রূপান্তর চোখের ইন্দ্রিয়কে সচেতন করে তোলে। রঙের অনুভূতি পরিবর্তন হয়। ঘটঘট শব্দ করে বন্ধ হয় সিলিং ফ্যান। সিলিং ফ্যানের একটি পাখা অর্ধেকটা ভাঙা। সেটাকে বিন্দু বানিয়ে ঘুরাতে লাগলাম আমার চোখগুলো। পাখা -ঘুরতে ঘুরতে দেয়ালের কোনখানে নিশানা করে থামবে, এটি দেখার তীব্র এক বাসনা নিয়ে অপেক্ষা করছি-এমন সময় ক্যামেরার ফ্ল্যাশ লাইটের মতো একটা নীল আলো ঘরে প্রবেশ করে; তারপর বিকট শব্দে চিৎকার । একের পর এক বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে আমার চোখ ফের জানালায় গিয়ে ঠেকে। ভেজা কুকুরটি একটা সঙ্গী পেয়ে যায় বাঁচার। তাদের দুজনের ভেতরে সূক্ষ্ম অনুভূতি আদান-প্রদান হচ্ছে; এমন সময় ঘরে প্রবেশ করে যুথি। বলল, ‘টেবিলে খাবার দেয়া হয়েছে।’ ‘এখনো ক্ষিদে পায়নি’ বলা উচিত হবে কিনা ভাবছি, কেননা ডাইনিং রুম থেকে যুথির বাবা, মানে আমার শ্বশুরের কণ্ঠ ভেসে আসছে।
স্ক্রিপ্ট রাইটার : প্রথম পর্বঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
আশিকের প্রধান সমস্যা, সে সবকিছু ভুলে যায়। কিছুক্ষণ আগের ঘটনা তাকে খুব চিন্তা করে মনে করতে হয়। চিন্তার মাঝখানে কোনো অপ্রত্যাশিত শব্দ কিংবা ঘটনার মুখোমুখি হতে হলে সেই চিন্তা আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হয়। এই কোনো একটা জায়গায় খেতে গিয়েছে, কিংবা কোনো কাজে। ফেরার সময় রিকশা করে ফিরে আসে। সে যে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে, ব্যাপারটা তার মনে পড়ে পরদিন। কিংবা কখনো দুদিন পর । তারপর মনে করার চেষ্টা, শেষবার কোথায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিল। নিউমার্কেট নাকি আসাদ গেট? একটা রিকশা নিয়ে বের হয়ে পড়া। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে দেখার ফাঁকে ফাঁকে চোখ বন্ধ করে চিন্তা করা, শেষ কোথায় বের হয়েছে গাড়ি নিয়ে? আশিক মনে করার চেষ্টা করে কিন্তু কিছুতেই মনে আসছে না। একেক বার চোখে একেকটা ছবি ভেসে আসে। কোনো একটা নির্দিষ্ট ছবিতে স্থির হতে পারছে না । বাসা থেকে বের হয়ে একটা রিকশা ভাড়া করে। গাড়ি খোঁজার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, গতকাল যেখানে যেখানে সে গিয়েছে সবগুলো জায়গায় যাওয়া।
মনোরথের কিছু একটাঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
আমরা বসে আছি একটা কাঠের ড্রইং রুমে। দেয়ালে কিছু অ্যাবস্ট্রাক্ট পেইন্টিং। একটা বাচ্চা হাতির মূর্তি শুঁড় উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। বিথির চোখের নিচে কালি জমেছে। বোধ হয় রাতে ঘুম হয় না। মানুষের চোখ যদি কথা বলে থাকে তাহলে চোখের কালি হলো সেই কথার সারাংশ । আমি ঘড়ির দিকে তাকাই। সকাল ৭টা ১০ মিনিট। বিথি বসে আছে চুপচাপ। কী যেন একটা বলতে চায় কিন্তু কী বলতে চায় জানে না। বললাম, ‘কী চিন্তা কর?” ‘কিছু একটা।’ ‘সেটা কী?’ ‘তুমি বুঝবে না।’ ‘তাই নাকি?’ ‘যেটা তুমি আগে বুঝতে, আমি কী কল্পনা করছি।’ তারপর কিছুক্ষণ নীরবতা। দুজন মনে মনে কি সব চিন্তা করে, নিজেদের ভেতরেই রেখে দিলাম । ‘আমি যা দেখি তুমিও তা দেখ? ‘হ্যাঁ দেখি।’ “আমি দেখছি একটা ফড়িং। বল তো কোথায়? সেটা
একটি আবাসিক হোটেলঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
শহরে বিরাট একটা হট্টগোল লেগে গেছে। সেটা কী নিয়ে, তা বোঝা যাচ্ছে না। সব কটা দোকানের শাটার লাগানো। আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী । অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন। থমথমে অবস্থা। এর ভেতরে একটি আবাসিক হোটেলের সামনে ছোটখাটো একটি জটলা তৈরি হয়। রাত তখন বারোটার কাছাকাছি। হোটেলের কলাপসিবল গেট লাগানো। ভেতর থেকে সিকিউরিটি গার্ড নির্বিকার ভঙ্গিতে জানাল, খোলা যাবে না।’ ‘গেট বাইরে অপেক্ষমাণ কয়েকজন; তারা থাকার জন্য রুম খুঁজছে । ভীষণ জরুরি সবার। আশেপাশে যে কয়টা হোটেল ছিল, রুম খালি নেই । তাদের একজন সিকিউরিটি গার্ডকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘গেট খোলা যাবে না কেন? কোথাও লেখা আছে?’ ‘বাইরে ধরপাকড় চলতেছে। গেট খুলতে নিষেধ আছে। তারপর এই কথা থেকে সেই কথায়, একটা বিচ্ছিরি গোলমাল বাঁধে। সেটার পক্ষে-বিপক্ষে মত দেবার এবং সেই মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে মানসিক স্ট্রেস থাকতে হয়, সেটা কারো ভেতরে নেই। প্রত্যেকে যে যার কথা বলছে এবং কেউই কারো কথা শুনছে না। অবস্থা যখন বেগতিক তখন সিকিউরিটি গার্ড গেট খুলতে সম্মতি জানায়। তবে মুশকিল হলো, একটি মাত্র রুম খালি আছে। তারা নিজেরা ফয়সালা করুক, রুমটিতে কে থাকবে।
ডেথ সার্টিফিকেটঃ অন্যমনস্ক বইয়ের – অংশবিশেষ
ঘরটা বেশ ছিমছাম। একটা টেবিল, কয়েকটা চেয়ার। সিলিং ফ্যান হঠাৎ হঠাৎ শব্দ করে আবার নিজ থেকে থেমে যায়। অতঃপর একই রিদমে ট্যাকট্যাক শব্দ । আমার সামনে বসে থাকা লোকটি, সেই ট্যাকট্যাক শব্দ উপেক্ষা করে বললেন, ‘এনেছ?’ আমি ব্যাগের ভেতর থেকে আমার বাবার ডেথ সার্টিফিকেট বের করলাম। ঠিক এমন সময় একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটে। ঢিলেঢালা ফতুয়া গায়ে, উত্তেজিত ভঙ্গিতে আমার বাবা প্রবেশ করেন। বললেন, ‘তোমার হাতে কী?’ আমার সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। বাবাকে দু সপ্তাহ আগে কবর দেয়া হয়েছে। কবরের সামনে ঘাস দিয়ে লাগানো হয়েছে সুন্দর একটা নামফলক। বাবার বিস্ময় মাখা চোখ দুটো কেমন যেন সরু থেকে আরও সরু হতে থাকে। নিজের ডেথ সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলে বললেন, ‘এসবের মানে কী? আমি বাবার দিকে তাকিয়ে থাকলাম অপলক। এ রকম একটা জলজ্যান্ত মানুষকে কেন আমার মৃত মনে হবে?
bangla online library: অন্যমনস্ক কেনার লিংক
বইটি রকমারিতে পেয়ে যাবেন যাদের সামর্থ্য আছে তারা অবশ্যই কিনে নিয়ে আসবেন বইটির কেনার লিঙ্কঃ [ Buy Link ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন